রহস্যময় লেখক।


 আরিফ সাহেব খবরের কাগজ নিয়ে পড়তেছিলো।সেখানে একটা নিউজ দেখে আরিফ সাহেব থমকে গেলো। একটা লেখকের ব্যাপারে লিখা হলো যার লিখা সকল বই রাতারাতি হিট হয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু লেখককে আজ পর্যন্ত কেউ দেখেনি।আরিফ সাহেব এটা দেখে হালকা মুচকি হাসলো।

আরিফ সাহেব একজন উচ্ছপদস্থ সরকারি অফিসার।আরিফ সাহেবের বাবা মা দুজনেই মারা গেছে।আরিফ সাহেব একটা এতিম খানায় বড় হয়েছে।

এখনো বিয়ে করেনি।আর সে প্রতিষ্ঠিত।তার আজ সব আছে বাড়ি আছে গাড়ি আছে সম্মান আছে কিন্তু একজন সংজ্ঞি নেই।কিন্তু তা নিয়ে তার কোন মাথা ব্যাথা নেই। কারন তার মেয়েদের প্রতি কোন আগ্রহ নেই।


এদিকে আনিশা একটা অফিসে রিপোটারের কাজ করে।তার বস তাকে দায়িত্ব দিয়েছে সে জেনো সেই লেখককে খুজে বের করে ইন্টারভিউ নিয়ে দেয়।

যদি এই কাজ না পারে তবে আনিশার জব থাকবেনা।আর যদি কাজ করতে পারে তবে আনিশার প্রমোশন হবে।এ নিয়ে আনিশা নিন্তায় অস্থির।

আনিশার মা খুব অসুস্থ আর তার দেখাশোনার জন্য আনিশার জবটা খুব দরকার।আনিশার বাবা আরেকটা বিয়ে করে আনিশাদের ফেলে রেখে চলে গেছে।সেই থেকে তাদের সংসারে কষ্টের বিশাল ঘনঘটা।

আনিশা তার জব টিকিয়ে রাখার জন্য সব রকমের চেস্টা করছে।পুরো নেট জুরে খুজলো,যেই অফিসের ঠিকানায় বই ছাপা হয় সেই অফিসে গেলো কিন্তু সব বিফলে, ছাপাখানার মালিক বললো বইগুলোর কপি কেউ অজানাভাবে দিয়ে যায় কিন্তু আজ পর্যন্ত না কেউ তাকে দেখেছে না তার সম্পর্কে কেউ কিছু জানে।

আনিশা বললো কেউ যদি নাই জানেন তবে তার নাম তো দেন না আপনাদের নামেই তো চালাতে পারেন।এই কথা শুনে একজন বললো অনেক আগে একজন নিজের নামে চালাতে গেছিলো সে অস্বাভাবিক ভাবে মারা গেছে।

যাই এই কথা শুনে আনিশা হতাশ হয়ে বাসায় ফিরছিলো। অনেকটা রাত হয়ে গেছিলো। চারিদিকে খুব অন্ধকার। এদিকে এক গাড়ি এসে আনিশাকে দাক্কা দিয়ে চলে গেলো।আনিশা রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে গেলো।

জ্ঞান ফেরার পর আনিশা নিজেকে একটা দামি হাসপাতালে আবিষ্কার করলো।এই হাসপাতালের বিলের কথা ভেবে আনিশা আবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছিলো। আনিশা চাচ্ছিলো পালিয়ে যেতে কিন্তু নার্স রা তাকে পালাতে দিচ্ছিলো না।

আর আনিশার শরীলের অবস্থা খারাপ থাকার কারনেও আনিশা পালাতে পারেনি।দু দিন পর আনিশা কিছুটা সুস্থ ফিল করলো।আনিশার শরীলের অবস্থা দেখে আনিশাকে ডাক্তার ছেড়ে দিলো।

এদিকে আনিশা জানতে চাচ্ছিলো কে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলো ডাক্তাররা বললো একজন ভদ্রলোক। কিন্তু সে চলে গেছে।এদিকে আনিশা টাকার চিন্তায় অস্থির এত টাকা কোথা থেকে দিবে।রিসেবশন থেকে টাকার পরিমানের কথা জেনে আনিশার হুশ ওড়ে যাবার অবস্থা। 

আনিশা আবারো অজ্ঞান হবার হাল যখন তখন রিসেপশনিস্ট বললো সেই ভদ্রলোক আনিশার বিল দিয়ে গেছে।আর একটা চিরকুট দিয়ে গেছে।

আনিশা ভদ্রলোক এর চিরকুট নিলো।আর অচেনা একজন মানুষ তাকে এত সাহায্য করেছে তার প্রতি তো ইকটু কিউরোসিটি থাকবে এটাই স্বাভাবিক। 

আনিশা বাড়ি এসে তার মায়ের সাথে কথা বললো।আনিশার মা চিন্তায় শেষ আনিশার একসিডেন্ট এর কথা শুনে আনিশার মা কান্না করে দিলো।আনিশা তার মানে কান্না করতে বারন করে দিলো।

এদিকে আনিশা পুরোপুরি ঠিক হবার পর তার মাথায় আবার ঘুরপাক খেতে লাগলো সেই রহস্যময় লেখকের কথা।আবার নতুন কোন উপায় খুজে পায় কিনা সেই আশায় আনিশা আবার বেড়িয়ে পড়লো। 

কিন্তু সারাদিন ঘুড়েও কোন ক্লো পেলোনা বলে হতাশ হয়ে রাস্তার পাশে থাকে একটা বেন্সিতে বসলো।সাথেই এক মহিলা চা বানাচ্ছিলো।আনিশা এক কাপ চা খেলো, চা খেয়ে টাকা দিবার সব সময় দেখলো সেই চিরকুট টা।

চিরকুট এ একটা ঠিকানা লিখা ছিলো। আনিশা তার আম্মাকে কল করে বলে দিলো আজ তার বাসায় ফিরতে সময় লাগবে।চিন্তা জেনো না করে।

আনিশা তার মায়ের সাথে কথা বলে একটা ফুলের দোকানে গেলো,একটা ফুলের তুড়া নিলো।তারপর ঠিকানার উদ্দেশ্যে এ বেড়িয়ে পড়লো।

আনিশা একটা বিশাল বাড়ির সামনে এসে ভয়ে ভয়ে ডোর বেল চাপল।এক মহিলা এসে দরজা খুলে জানতে চাইলো আনিশা কি চায়।

আনিশা সব বলার পর মহিলা আনিশাকে বাহিরে রেখে ভিতরে চলে গেলো, ইকটু পর ফিরে এসে আনিশাকে ভিতরে বসার ঘরে নিয়ে গেলো।আর খাবার দিয়ে বললো তার মালিক আসছে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার জন্য।

আনিশা বসে ছিলো,হুট করে তার চোখ পড়লো সোফায় রাখা একটা খবরের কাগজের উপর। সেই নিউজটা, যেটা লেখককে নিয়ে লিখা।আনিশা আরো পেরেশান হয়ে গেলো তার চাকরি চলে যাবার কথা মনে হতেই।

আনিশা কিছু না খেয়ে চুপচাপ ভেবেই যাচ্ছে তার কী করা উচিত তা নিয়ে।এদিকে লেখকের কোন আতা পাতাই পাচ্ছেনা আনিশা।

ইকটু পর একজন ভদ্রলোক আসলো,আনিশাকে বললো তুমি কি ঠিক আছো?আনিশা ঠিক আছে বলে ভদ্রলোক কে ফুল দিয়ে সেদিনের জন্য ধন্যবাদ জানালো।

কিন্তু এখানে বাধলো আরেক বিপদ,আনিশাকে সেই লোকটা বললো শুধু ধন্যবাদ এ চলবেনা। আমি যে এতগুলো টাকা বিল দিলাম তা ফেরত দিতে হবে নয়তো আমাকে বিয়ে করতে হবে।

এই কথা শুনে আনিশা তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠলো এ কেমন বিচার, চেনা নেই জানা নেই হুট করে অচেনা একজনকে বিয়ে কি করে করবে?বিয়ে তো আর ছেলে খেলা নয়?

আনিশা না করে দিলো,লোকটা আনিশার কাছ থেকে টাকা চাইলো।লোকটা বললো হয় টাকা দাও না হয় বিয়ে করো।আনিশা পড়লো মহা বিপাকে।এ কেমন বিচার রে বাবা।

এত টাকা আনিশা পাবেই বা কোথায়?


_____________________আগামী পর্ব

[[এই গল্পের সমস্ত কাহিনি কাল্পনিক,আর মন গড়া। তাই কেউ লজিক খুজতে যাবেন না।সবটাই অবাস্তব।]]

Post a Comment

0 Comments