রহস্যময় লেখক। পার্ট ২



আগের পর্ব 

আনিশা হতাশ হয়ে বসে রইলো। বুঝতে পারছিলো না তার কি করা উচিত। আর আনিশার বাবা চলে যাবার পর থেকে আনিশার ছেলেদের প্রতি কোন আগ্রহ নেই এমনকি বিয়ে নামক শব্দটাও আনিশা শুনতে পারেনা।কিন্তু আজ পড়লো মহা বিপাকে। একদিকে চাকরি, অন্যদিকে এই লোকটার টাকা আবার তার উপর বিয়ে। 

আনিশাকে এভাবে চুপ করে থাকতে দেখে লোকটা বললো কি করবে ভেবে দেখেছো?আনিশা চোখ তুলে লোকটার দিকে তাকালো, দেখতে ভালোই লম্বা চওড়া ফর্সা যাকে বলা চলে মিস্টার পারফ্রেক্ট।কিন্তু আনিশাতো ছেলেদের দেখতেই পারেনা বিয়ে তো দূরে থাক।শুধু মাত্র চাকরির জন্য আনিশা ছেলেদের সাথে কথা বলা তাছাড়া ছেলেদের কথা ভাবাও আনিশার মনে আসেনা।

অনেক ভেবে আনিশা বললো "আমি আপনাকে চিনিনা, জানিনা আর আমার দুনিয়াতে একজন আপন মানুষ আছে আমার আম্মু তার অনুমতি ছাড়া বিয়ে কিভাবে করবো?আমাকে কিছুদিন সময় দিন আমি আপনার সকল টাকা টাকা ফেরত দিয়ে দিবো।"

একথা শুনে লোকটা বললো আমি আরিফ সাহেব।আমারো দুনিয়াতে কেউ নেই। আমি একাই থাকি বাড়ির কাজের মানুষ দের সাথে একটা জব করি এবার তো জানলে আমার পরিচয়। আর হ্যাঁ আমি কোন সময় দিতে পারবো না হয়তো আমায় এক্ষনি বিয়ে করো নয়তো টাকা ফেরত দেও।

আনিশা বললো আমার কাছে টাকা নেই, এত টাকা পাবো কোথায় সময় দিলে ফেরত দিতে পারতাম কিন্তু।কিন্তু বলার সাথে সাথেই আরিফ সাহেব বললো তুমি কি তোমার মাকে এখানে চাচ্ছো?আমি লোক দিয়ে আনিয়ে নিচ্ছি।এখন ভাবো কি করবে?

আনিশা অনেক ভেবে রাজি হয়ে গেলো।এদিকে আরিফ সাহেবের লোক আনিশার মাকে ও নিয়ে এসেছে।আনিশার মা আরিফ সাহেব কে দেখে বাড়ির অবস্থা দেখে রাজি হয়ে গেলো। 

ভ্যাম্পায়ার রাজপুত্র 

আরিফ সাহেব যেখানে চাকরি করে সেখান থেকে আরিফ সাহেব কে বলেছে যদি দু দিনের ভিতর বিয়ে না করে তবে তার জব চলে যাবে।ব্যাপারটা হলো আরিফ সাহেব ও বিয়ের প্রতি আগ্রহী না।আর অফিসের বস আরিফ সাহেব কে খুব পছন্দ করতো, আরিফ সাহেব এর কাজ কর্ম তার পছন্দ কিন্তু আরিফ সাহেব কে বলে বলে ও কোন বিয়ে করাতে না পেরে উনি এই সিদান্ত নিলো।

এই জন্য আরিফ সাহেব আনিশাকে বিয়ে করতে চাইছে।ঘরোয়া ভাবে আরিফ সাহেবের সাথে আনিশার বিয়ে হয়ে গেলো। বিয়ের রাতে আনিশা আরিফ সাহেব কে বললো সে তার জব ছাড়তে চায়না আর আরিফ সাহেবের সকল টাকা আনিশা ফেরত দিবে, তারপর আরিফ সাহেবের কাছ থেকে ডিভোর্স নিয়ে নিবে।কারন আনিশা ছেলেদের পছন্দ করেনা।আরিফ সাহেব বললো তার ও বিয়ের কোন আগ্রহ নেই। তাই টাকা দিবার পর ডিভোর্স করে নিতে পারে তাতে আরিফ সাহেব এর কোন সমস্যা নেই।

একথা শুনে আনিশা খুশি হলো। আরিফ সাহেব বললো বিয়ে করেছি ঠিক ই কিন্তু কখনো বউয়ের অধিকার চাইতে এসোনা বলে বারান্দায় চলে গেলো। আনিশা হাফ ছেড়ে বাচলো।আনিশা আরিফ কে এটাও বলে এসব ব্যাপার জেনো তার মা না জানতে না পারে,আর আরিফ সাহেব তাও মেনে নিয়েছিলো। এসব ই বসে ভাবছিলো আনিশা তখনি তার ফোন বেজে ওঠলো তার বস ফোন করেছে সেই লোকের ব্যাপারে কিছু কি করতে পারলো?

আনিশা বললো কিছুই পারেনি তার অফিসের বস রেগে গেলো, আর বললো তোমার কাছে একমাস সময় আছে তার ভিতর যদি সেই লোক কে খুজে তার ইন্টারভিউ না নিতে পারো তবে তোমার জব থাকবেনা।এটা বলে আনিশার বস ফোন কেটে দিলো।

আনিশা সেই লেখক কে নিয়ে ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে গেলো। এদিকে আরিফ সাহেব বারান্ধা থেকে এসে ঘুমন্ত আনিশাকে দেখে চমকে ওঠলো,ঠিক জেনো একটা নিস্পাপ ফুল।আসলে আরিফ সাহেব যেদিন আনিশাকে বাচিয়েছিলো সেদিন ই আনিশাকে তার ভালো লেগে ছিলো, কিন্তু কাজের চাপের জন্য সেদিন আনিশাকে হাসপাতালে রেখেই বাসায় চলে আসতে হয়েছিলো। তাই তার ঠিকানাটা চিরকুটে লিখে দিয়ে এসেছিলো। 

যখন আনিশা আরিফের বাসায় এসেছিলো সেদিনই আরিফ সাহেবের বিয়ে করার শেষ দিন ছিলো। মানে সেদিন বিয়ে না করলে তার জব থাকবেনা।যাই হোক আরিফ সাহেব তার বস আর অফিসের কলিগকে ইনবাইট করলো বাসায় আর বিয়ের ব্যাপারে বললো।

তারপর আরিফ সাহেব সোফায় চলে গেলো ঘুমুতে।এদিকে সকাল হয়ে গেছে দেখে ফ্রেশ হয়ে  আনিশা নিচে গেলো। তারপর চা বানিয়ে উপরে আসার পর দেখলো আরিস সাহেব ও জেগে বসে আছে চা দিতেই আরিফ সাহেব বললো আজ আমার বাসায় আমার বস আর আমার কলিগরা আসবে তুমি রেডি হয়ে থেকো।আনিশা বললো আমার কাছে তো ড্রেস নেই? 

আসলে আরিস সাহেব কোন কেনাকাটাই করেনি, শুধু বিয়ের রেজিস্টার করেছে আইনি ভাবে যার জন্য কোন জামাকাপড় ই নেই আনিশার।তাই আরিফ সাহেব বাহিরে চলে গেলো, আর ঘন্টাখানেক পর আরিফ সাহেব ফিরে আসলো অনেক কাপড় নিয়ে।যা দেখে আনিশা খুশি হলেও মনে মনে ভাবতে লাগলো লোক্টাকে যতটা খারাপ ভেবেছিলাম ততটাও খারাপ নয়।

কিছুক্ষণ পর সকল লোক বাসায় চলে আসলো।আনিশা ও একটা লাল শাড়ি পরে নিচে নেমে আসলো যা দেখে আরিফ সাহেব কিছুক্ষন তাকিয়েই ছিলো। সবার আনিশাকে পছন্দ হলো খাওয়া দাওয়া করে অনেক কথাবার্তা বলে সবাই চলে গেলো। 

রাতে আরিফ সাহেব আনিশাকে ধন্যবাদ জানালো আর বললো তোমার মাকে আমাদের বাড়িতেই থাকতে বলে দিয়ো উনি একা উনার বাড়িতে কি করবে।আনিশা কিছুই বললো না।আরিফ সাহেব তার ল্যাপটপ নিয়ে বারান্দায় চলে গেলো এদিকে আনিশাও তার ল্যাপটপ নিয়ে রহস্যময় লেখকের লিখা একটা নোবেল পড়তে লাগলো।জেনো কোন ক্লো খুজে পায় কিনা কিন্তু এবারো আনিশা হতাশ হলে।

পরের দিন সকাল বেলা আনিশার মা চলে গেলো আনিশা অনেক করে থাকতে বললো কিন্তু আনিশার মা থাকলোনা,উনার কাছে উনার নিজের ছোট খুড়েঘরেই অনেক শান্তি।আনিশাও ভাবলো এখানেতো আর আনিশা স্থায়ি না টাকা দেওয়া হয়ে গেলেই তো সব শেষ হয়ে যাবে তাই আনিশাও আর আটকালো না।

আনিশা ফ্রেশ হ'য়ে অফিসে চলে গেলো আরিফ সাহেব ও অফিসে চলে গেলো। আনিশার বস আবার তাকে তার কাজের ব্যাপারে জানতে চাইলে আনিশা নিরাশ হলো।এদিকে আরিফ সাহেব অফিসে যাবার পর তার বস বললো আরো কয়েকদিন ছুটি কাটানোর জন্য কিন্ত্ আরিফ সাহেব মানা করে দিলো। 

আনিশা রোজকার মত অফিসের বাকি কাজ করে বাড়ি ফিরে আসলো, এসেই খুজতে লাগলো সেই লেখকের ব্যাপারে কিন্তু লেখকের নোবেলের কোথাও লেখকের ব্যাপারে কিছুই লিখা নেই।এসব দেখে আনিশার মাথা হ্যাং হয়ে যেতে লাগলো।আনিশা রাগে কি করবে বুঝে পাচ্ছিলো না___________আগামী পর্ব।

[[গল্পের সমস্ত কাহিনি আর চরিত্র কাল্পনিক তাই দয়া করে কেউ লজিক খুজতে আসবেন না।কোন ভুল হলে কমেন্টে জানিয়ে দিবেন শুধরে নিবো ইনশাআল্লাহ ]],

আজ এই পর্যন্তই,আবারো হাজির হয়ে যাবো নতুন পর্ব নিয়ে সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আর ইচ্ছে ঘুড়ির সাথেই থাকুন। 

আল্লাহ হাফেজ। 

Post a Comment

0 Comments