ভুতের গল্প। সত্য কাহিনী। পার্ট-২

 

ভুতের গল্প। সত্য কাহিনী। পার্ট -২

আমাদের জীবনে মাঝে মাঝে এমন সব ঘটনা ঘটে যার কোন ব্যাখ্যা হয়না।বিজ্ঞান বলে ভুত বলতে কিছু নেই আমি নিজেও জানিনা ভুত বলতে কিছু আছে কিনা।

তবে এমন কিছু ঘটনার সাক্ষি আমরা হই যার কোন সঠিক ব্যাখ্যা ও খোজে পাইনা।তেমনি একটা কাহিনী আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

আরও পড়ুন ঃভুতের গল্প। সত্য কাহিনী। পার্ট -১

আমি তখন ক্লাস এইটে।প্রথমেই বলে রাখি আমি গ্রামের মেয়ে।আমরা যেই স্কুলে পড়তাম তা আমাদের বাড়ি থেকে অনেকটাই দূরে ছিলো। 

যেদিনের ঘটনা বলছিলাম সেদিন আমি স্কুলে টিফিন নিয়ে যাইনি।আম্মার রান্নায় দেরি হবার কারনে মা টিফিন দিতে পারেনি।তাই  আমায় টাকা দিয়ে দিছিলো স্কুলের দোকান থেকে কিছু কিনে খাবার জন্য।

প্রত্যেক দিনের মত সেদিন আমাদের টিফিন দেয়।তো আমাদের বাড়ি দূরে থেকে স্কুল দূরে হবার কারণে স্কুল থেকে বাড়ি এসে খেয়ে যাবো তেমন পরিস্থিতি ছিলো না।দোকানে গিয়েছি কিছু কিনার জন্য গিয়ে দেখি দোকান বন্ধ।

আমাদের স্কুলের সাথে একটাই দোকান ছিলো। গ্রামে দোকান খুব কম ই ছিলো তখন।আজ থেকে অনেক বছর আগের কথা তখন।আশেপাশে কোন দোকান ছিলো না, কিন্তু এই দোকান থেকে অনেক দূরে আরেকটা দোকান ছিলো। 

সেটা এতটাই দূরে ছিলো যে সেখানে গিয়ে কিছু কিনে স্কুলে আসতে আসতেই টিফিনের সময় শেষ হয়ে যাবে।এদিকে অনেক ক্ষুধা ও লেগেছিলো। তাই সাথে আমার এক বান্ধুবিকে নিয়ে সেই দোকানেই চলে যাই।

সেই দোকান গিয়ে কিছু কিনে ফেলি।সেই দোকান থেকে স্কুলে আসার জন্য একটা শর্টকাট রাস্তা ছিলো। যেটা দিয়ে আসলে খুব তাড়াতাড়ি আমরা স্কুলে ফিরতে পারবো টিফিন টাইম শেষ হবার আগেই।আর টিফিনের পর আমাদের ইংলিশ ক্লাস ছিলো উনার ক্লাস মিস করলে পিটাতো।

তাই বাধ্য হয়েই আমি আর আমার বান্ধুবি সেই রাস্তা দিয়ে আসি।কিন্তু আমরা দুই জনের একজন ও সেই রাস্তা ঠিকঠাক চিনতাম না।আর সেই রাস্তায় খুব ঝুপঝাড় ছিলো। 

সেই রাস্তা দিয়ে আসার সময় একটা জায়গায় আসার পর সেখান দিয়ে দেখা যাচ্ছিলো আমরা যেই রাস্তা দিয়ে এসেছি সেই রাস্তাটা।তবে সেই রাস্তায় যেতে হলে মাঝখান দিয়ে যেতে হবে।মানে আমরা যেই রাস্তায় বর্তমান ছিলাম সেই রাস্তা ছেড়ে অন্য রাস্তায় যেতে হবে মাঝ পাড়হয়ে।

সেই রাস্তা থেকে অন্য রাস্তা দেখা গেলেও মাঝখানে অনেকটা জায়গা ছিলো, গাছগাছালি দিয়ে ভরা।আর সেই রাস্তাটাও অনেকটা দূরে ছিলো। কিন্তু আমরা আগে আর চিনিনা বলে সিদান্ত নেই এই মাঝখান দিয়েই আগের রাস্তায় চলে যাবো যেই রাস্তা দিয়ে দোকানে গিয়েছিলাম সেই রাস্তায়।

যখন আমরা রাস্তা থেকে নিচে নামি, দুই রাস্তার মাঝখানে যেই জায়গাটা ছিলো সেই জায়গায় কিছু বাচ্ছাদের খেলতে দেখি।আমাদের দেখে তারা বার বার বারন করছিলো এখান দিয়ে না যাবার জন্য।তারা বলছিলো সামনে কবর।

কিন্তু আমরা দুজন সামনে কোন কবর দেখতে পাইনি।তাই এদের কথায় পাত্তা না দিয়ে সামনের দিকে এগুতো থাকি।

তখন আমরা দুজন সামনে এমন একটা জিনিস দেখি যা বর্ননা করতে পারবোনা।কি ছিলো সেটা আমার জানা নেই তবে দুজনের সাথে সাথে একটা গর্তে পরে যাই।কিন্তু যখন আমরা আসি তখন কোন গর্ত ছিলো না।

এটা কি করে হলো। আর সবথেকে অবাক করা বিষয় এটাই ছিলো। আমরা যখন গর্তে পরে যাই তখন বাচ্ছারা বলছিলো আগেই না করেছিলাম।কিন্তু আমরা যখন সেই গর্ত থেকে ওঠে আসি তখন সেখানে না কোন বাচ্ছা ছিলো আর না কোন গর্ত ছিলো। 

এটা কি করে হতে পারে?আমরা বাচ্ছাদের দেখেছি কিন্তু তারা নিমেষেই কোথায় চলে গেলো?, আর যেই গর্তেই বা আমারা পড়ে গিয়েছিলাম সেটাই বা কোথায় গেলো?

এসব কি পুরোটাই আমাদের দুজনের ভুল ছিলো। জানিনা, জানা নেই তবে আমরা দেখেছিলাম।আমরা দু জনেই দেখেছিলাম।

তারপর স্কুলে এসে স্কুলের ইসলামিক স্যারকে সব বলি।উনি আমাদের শুধু এটাই বলেছিলো এখানে যাওয়া তোমাদের উচিত হয়নি।কিন্তু কেনো হয়নি তা বলেনি, আর বলেছিলো তোমাদের দুজনের ভাগ্য খুব ভালো ছিলো যার কারনে বেঁচে ফিরেছো।

আমরা সেই রাস্তায় আর কখনো যাইনি।সেদিনের পর আমার অনেক জ্বর ছিলো। সেদিনের ঘটনা মনে হলে আজও ভয় লাগে।আজও ভুলতে পারিনা সেদিনের কথা।কি ছিলো সেটা?বাচ্ছা গুলোই বা কোথায় চলে গেছিলো যা আজও দুজনের কাছে রহস্য হয়ে রয়ে গেলো। 

Post a Comment

0 Comments